ডিম এবং বাসা বামপাশের 'Oviraptor' অথবা ডানপাশের 'A relative of Velociraptor' যে কোন এক প্রজাতির হতে পারে।
ডিম আগে না মুরগি আগে এই বিতর্কটা বেশ পুরনো। অনেক আগে থেকে বিজ্ঞানীমহলে এই বিষয়টা একটা রহস্যময় বিষয় হয়েছিল। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে এর একটা সমাধান খুঁজে পাওয়া গেছে। বিরল প্রজাতির এক প্রকার ডাইনোসরের বাসার জীবাস্ম পাওয়া গেছে যা গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা আশার বাণী শুনিয়েছেন। ৭৭ মিলিয়ন বৎসর আগের এই বাসাটিতে পাঁচটি ডিম ছিল। মা ডাইনোসর এই ডিমগুলোতে তা দেয়ার সময় হঠাৎ করে জলের উচ্চতা বেড়ে গিয়েছিল। ফলে চারপাশ প্লাবিত হয়ে যায়। মা ডাইনোসর বাধ্য হয় বাসা ছেড়ে চলে যেতে। ডিমসহ এই সম্পূর্ণ বাসাটা বালির নিচে এতদিন চাপা পড়ে ছিল। লম্বায় এই বাসা প্রায় ১.৫ ফিট (আধা মিটার) এবং ওজনে ১১০ পাউন্ড (৫০ কেজি)। বিজ্ঞানীরা এখন বেশ জোর গলায় বলছেন মুরগী নয় প্রথমে ডিম এসেছে। আলবার্তাতে অবস্থিত ক্যালিগারির বিশ্ববিদ্যালয়ের Paleontologist ডার্টা জেলিনস্কি (Darta Zelenitsky) বলেন এটা এখন পরিষ্কার যে মুরগি নাকি ডিম আগে এসেছে। মুরগী বা পাখিজাতীয় প্রাণীদের আগমনের বহু পূর্বেই ডাইনোসররা ডিম পাড়তে শুরু করেছিল। অতএব মুরগি নয় ডিম আগে এসেছে একথা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে।
বালুঢাকা নদীর তীরে অবস্থিত এই বাসার ফসিলটি ১৯৯০ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল। ক্যালিগারির আলবার্তাতে অবস্থিত কানাডা ফসিল একাডেমিতে এতদিন রাখা ছিল। ২০০৭ সালে বাসার ফসিলটি Royal Tyrrell Museum of Paleontology in Albertaতে এনে রাখা হয়।
হাঁসের মতো চঞ্চুযুক্ত এক বিরল ধরণের ডাইনোসর এই ধরণের বাসা বানাতো। জেলিনস্কি প্রথম এই বাসাটিকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি বুঝতে পারেন যে এটা এক ধরণের ছোট সাইজের মাংশাসী ডাইনোসরের।
ফসিল হয়ে যাওয়া ডিমের ছাপ এবং ভেঙে যাওয়া খোসার টুকরো
উত্তর আমেরিকাতে ডাইনোসরের বাসা খুব কম আবিষ্কৃত হয়েছে। এর আগে যেগুলো পাওয়া গিয়েছিল সেগুলো ছিল Troodon নামক আর এক জাতের ডাইনোসরের। কিন্তু এই বাসাটি যে ঠিক কোন প্রজাতির ডাইনোসরের তা নিশ্চিত হওয়া যায় নি। তবে সেটা যে ছোট আকৃতির ডাইনোসর এবং এই জাত থেকেই যে জুরাসিক যুগের সময়ে পাখির উদ্ভব হয়েছে তা নিশ্চিত।বাসাটিকে পর্যবেক্ষণ করে আরও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে।
* বাসাটি একবারে ১২টি ডিম তা দেয়ার মতো করে তৈরি।
* মাঝখানে কিছুটা ঢালু এই বাসাতে ডিমগুলো একমুখি করে সাজানো ছিল।
* ডিমগুলো প্রায় ৫ ইঞ্চি (১২ সে.মি.) লম্বা।
* মা ডাইনোসর বাসার উচ্চ অংশে ডিম পারতো। ডিমগুলো গড়িয়ে গড়িয়ে নিচে পড়ে সোজা হতো।
* মা ডাইনোসর একবারে দুইটি ডিম পারতো। একবারে একাধিক ডিম পাড়ার ঘটনা কুমিরদের মধ্যেও দেখা যায়। কোন কোন পাখিও এরকম করে, কিন্তু বেশিরভাগ পাখি একবারে একটা ডিম পাড়ে। কুমিররা এই ডাইনোসরগুলোর অধিকতর নিকটতম প্রজাতি।
সূত্র:
* লাইভ সাইন্স
* ইয়াহু নিউজ
1 টি মন্তব্য:
আরিব্বাস!! বলেন কি? তাহলে মুরগী নয় ডিম আগে এসেছে? অন্তত: ডাউনোসরের মাধ্যমে হলেও,এই তো? যাক বিষয়টা বুঝলাম। এবার আড্ডায় বন্ধুদের বোকা বানাতে পারবো।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আর হ্যাঁ, আপনার এই ব্লগের আমি নিয়মিত পাঠক হয়ে গেলাম।
Post a Comment
আপনার প্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ভাবনা, ভিন্নমত প্রকাশ করুন। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলে ইমেইল করুন।