Monday, December 1, 2008

রাতের আকাশে এক দুর্লভ ত্রিভুজ

আজ সন্ধ্যায় রাতের আকাশে এক অসাধারণ ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতি ও শুক্রগ্রহ চাঁদের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। ফলে এই তিনটি মহাজাগতিক বস্তু এক ত্রিভুজের সৃষ্টি করেছে। প্রস্তুতি ছিল না বলে ছবি তুলতে পারিনি। তাই হাতে একে বোঝানোর চেষ্টা করছি। ডানপাশের ছবিতে দেয়া তিনটি কালো বিন্দু হলো চাদ, শুক্র ও বৃহস্পতি। এই তিনটি মহাজাগতিক উপাদানের এত কাছাকাছি আসার ঘটনা খুব বিরল। প্রায় ৪০-৫০ বৎসর পরপর এরকম মাহেন্দ্রক্ষণ আসে। আজকে যেমন ঘটল। এরপর ২০৫২ সালে এমন ঘটবে।
প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানিয়েছে যে এই ঘটনাটি শুধুমাত্র উত্তর আমেরিকা থেকে দেখা যাবে। কিন্তু আমরা তো বাংলাদেশ থেকেই দেখতে পেলাম। খবরে প্রকাশ:
সৌরজগতের উজ্জ্বলতম দুই গ্রহ শুক্র ও বৃহস্পতি আজ সোমবার চাঁদের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান করবে। এগুলোর এমন অবস্থানের কারণে রাতের আকাশে তৈরি হবে ত্রিভুজ আকৃতির এক অনন্য দৃশ্য, যা আগামী ৪০-৪৫ বছরের মধ্যে আর দেখা যাবে না। তবে বিরল এ দৃশ্য কেবল উত্তর আমেরিকার লোকজনই খালি চোখে দেখতে পাবে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের গিরিফিথ মানমন্দিরের জ্যোতির্বিজ্ঞানবিষয়ক পর্যবেক্ষক অ্যান্টনি কুক বলেন, সোমবার সুর্যাস্তের ঠিক পরমুহুর্তে দক্ষিণ-পশ্চিমের আকাশে শুক্র, বৃহস্পতি ও চাঁদকে একই সঙ্গে দেখা যাবে। এ জন্য কোনো টেলিস্কোপের প্রয়োজন হবে না। খালি চোখেই এগুলো দেখা যাবে। এগুলো প্রতিবছর একে অন্যকে অতিক্রম করলেও এমন অবস্থান তৈরির ঘটনা খুবই বিরল।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানান, উত্তর আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিম আকাশে শুক্র ও বৃহস্পতি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে একে অপরের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। গতকাল রোববার চাঁদ ওই দুই গ্রহের কিছুটা নিচে ছিল। আজ রাতে গ্রহ দুটির ওপরে অবস্থান নেবে চাঁদ। কাল মঙ্গলবার থেকে এগুলো ফের একে অপর থেকে দুরে সরে যেতে থাকবে। ২০৫২ সালের আগপর্যন্ত এগুলো আর এমন কাছাকাছি অবস্থানে আসবে না। আবার সেই বিরল দৃশ্য দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে প্রায় ৪৪ বছর।
গতকাল হ্যামিলটনের ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ ও জ্যোতির্বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডগলাস ওয়েলস বলেন, "কম শক্তিশালী দুরবিন দিয়েও বৃহস্পতির চারটি চাঁদকেও দেখা যাবে। আগামীকাল আমরা হয়তো অনেকেরই ফোন পাব। তারা রাতের আকাশে কী দেখা গেল এমন সব প্রশ্ন করবেন।"
সন্ধ্যার আগমুহুর্ত থেকে শুক্র, বৃহস্পতি ও শনির খুব কাছাকাছি অবস্থানের দৃশ্যটি পৃথিবী থেকে খালি চোখে দেখা গেলেও বাস্তবে তাদের মধ্যকার দুরত্বের ফারাক কিন্তু অনেক। পৃথিবী থেকে চাঁদের দুরত্ব দুই লাখ ৪০ হাজার মাইল, শুক্রের নয় কোটি ৩০ লাখ মাইল ও বৃহস্পতির ৫৩ কোটি ৯০ লাখ মাইল।
খবরে কেন যে শুধু উত্তর আমেরিকা থেকে দেখা যাওয়ার কথা বলেছে তা বুঝতে পারলাম না। এছাড়া যে ছবিটি দিয়েছিল, তাতে চাঁদের সাথে অন্য গ্রহদুটোকে এক লাইনে দেখা গেছে। কিন্ত আমরা বাস্তবে সত্যি সত্যি ত্রিভুজাকারেই দেখলাম। প্রথম আলো খবর সংগ্রহ করেছে thestar থেকে। সেখানে ভিজিট করে মূল ছবিটি দেখলাম। খবরটিও পড়লাম। The Star এ প্রকাশিত ছবিটা স্পষ্ট ও বড় হওয়ায় বিষয়টি ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে। চাঁদ তার নিজস্ব গতিপথে চলতে চলতে শুক্র ও বৃহস্পতিগ্রহের মাঝখান দিয়ে যাবে। সেই সময়ে এক অনন্য মুহূর্তে তৈরি হবে এক মহাজাগতিক ত্রিভুজ।
সত্যিই তাই। আমি ও আমরা দৃশ্যটি দেখেছি ঠিক যখন ত্রিভুজ তৈরি হয়েছে, তখন। সন্ধ্যা পার হয়ে, ৭টার পরপর। বাড়ির আশেপাশে গাছপালা থাকায় দীর্ঘসময় ধরে বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করতে পারিনি। কিন্তু মূল দৃশ্যটি দেখতে পেরেছি।

স্থির ছবিসূত্র: thestar

0 টি মন্তব্য:

Post a Comment

আপনার প্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ভাবনা, ভিন্নমত প্রকাশ করুন। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলে ইমেইল করুন।