Tuesday, August 12, 2008

পূর্ণতার পথ ও বিস্ময়কর পূর্ণতা

পূর্ণ সূর্যগ্রহণ এবং পূর্ণতার পথ
পূর্ণতার পথ
যদি চাঁদের ছায়ার অভ্যন্তরভাগ পৃথিবী পৃষ্ঠের উপর দিয়ে সোজা চলে যায়, তাহলেই সূর্যগ্রহণ দেখা যায়। পৃথিবী পৃষ্ঠের যে অংশ দিয়ে এই ছায়া পরিভ্রমণ করে তাকে বলে পূর্ণগ্রহণের পথ। সাধারণত এই পথ ১০.০০০ মাইল লম্বা এবং প্রায় ১০০ মাইল চওড়া। পৃথিবীর সম্পূর্ণ পৃষ্ঠদেশের মাত্র ১% ভাগে এই ছায়া পরে। চাঁদের দ্বারা সৃষ্ট পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখতে হলে এই পথের কোন এক জায়গায় উপস্থিত থাকতে হবে।

পৃথিবীর যে কোন জায়গা দিয়ে 'পূর্ণগ্রহণের পথ' চলে যেতে পারে। উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত যে কোন জায়গায় পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দৃশ্যমান হয়ে উঠতে পারে। মনে রাখতে হবে বৎসরে মাত্র ১টা কি ২টা আবার কখনও কখনও ২ বৎসরে ১টা পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ঘটতে পারে। আবার যেহেতু পৃথিবীপৃষ্ঠের বেশ সরু একটা এলাকা দিয়ে পূর্ণসূর্যগ্রহণ পরিভ্রমণ করে সেহেতু একই জায়গা থেকে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ বারবার দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। সাধারণত একই জায়গা থেকে পুনরায় পূর্ণসূর্যগ্রহণ দেখার জন্য গড়ে ৩৭৫ বৎসর অপেক্ষা করতে হতে পারে। অবশ্য মাঝের এই বিরতির সময়টা কমবেশিও হতে পারে। যেমন: আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সির প্রিন্সটন এলাকা থেকে শেষ পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা গেছে ১৪৭৮ সালে। এর পরের পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ঘটবে ২০৭৯ সালে। দুই পূর্ণগ্রহণের মাঝে ৬০১ বৎসরের বিরাট একটা ফারাক রয়েছে। কিন্তু সেই প্রিন্সটন থেকেই পরবর্তী পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে ২১৪৪ সালে। অর্থাৎ মাত্র ৬৫ বৎসর পরে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা থেকে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে ২০০৯ সালের ২২ জুলাই তারিখে। এর পরবর্তী ১০০ বৎসরে আর কোন পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ঐ এলাকা থেকে দেখা যাবে না।

২০০৬ সালের পূর্ণ সূর্যগ্রহণ
বিস্ময়কর পূর্ণতা
খুব অল্প সময়ের জন্য পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ঘটে। কয়েক মিনিটের বেশি স্থায়ী হওয়া খুব দুর্লভ ঘটনা। একেবারে পূর্ণ সূর্যগ্রহণকে এক বিরল প্রাকৃতিক প্রদর্শনী বলে অভিহিত করা হয়। সূর্যের উজ্জ্বল অংশ যখন চাঁদের কালো গোলক দিয়ে ঢেকে যায়, তখন পৃথিবী গোধুলির মত রহস্যময় আলো আঁধারিতে ঢেকে যায়। তখন চাঁদের চারপাশে এক হালকা আলোকবলয় দেখা যায়। এটাই সূর্যের বিখ্যাত জ্যোতির্বলয়। এটা তৈরি হয় সূর্যের প্লাজমা দিয়ে। এর তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকে। এই জ্যোতির্বলয় মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য দেখা যায়।

বিজ্ঞানীরা পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন। সূর্যের বলয়ের তাপমাত্রা অনেক বেশি কেন থাকে? কিভাবে সূর্যের এই প্লাজমা অংশের তাপ এবং শক্তি মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে? সূর্যের এই শিখা কিভাবে তৈরি হয়? এরকম বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর বিজ্ঞানীরা সূর্যগ্রহণের সময় খোঁজার চেষ্টা করেন।

ছবি ও তথ্য কৃতজ্ঞতা: MrEclipse.com (লিখিত অনুমতি গ্রহণ সাপেক্ষে প্রকাশ করা হল)

0 টি মন্তব্য:

Post a Comment

আপনার প্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ভাবনা, ভিন্নমত প্রকাশ করুন। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলে ইমেইল করুন।