সূর্যগ্রহণ কেন হয় তা জানতেহলে আমাদেরকে প্রথমে চাঁদের গতিপথকে চিনতে হবে। চাঁদ শীতল, পাথুরে একটি উপগ্রহ; এর ব্যাস প্রায় ২,১৬০ মাইল (৩,৪৭৬ কি.মি.)। চাঁদের নিজস্ব কোন আলো নেই। সূর্যের আলো চাঁদের পৃষ্ঠদেশে পরে চাঁদকে আলোকিত করে তোলে। আমরা সূর্যের প্রতিফলিত আলোকে চাঁদের আলো বলে মনে করি। চাঁদ সাড়ে ২৯ দিনে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করে। প্রত্যেকটা আবর্তনের সময় চাঁদ তার গতিপথের কিছুটা পরিবর্তন করে।
চাঁদের আবর্তনকালের 'নতুন চাঁদ' বলতে যে অবস্থাকে বোঝানো হয়, তা আসলে পৃথিবী থেকে কোনক্রমেই দৃশ্যমান নয়। কারণ এ সময় চাঁদের যে অংশটি আলোকিত থাকে তা পৃথিবী থেকে দৃষ্টিপথের বাইরে থাকে। পূর্ণিমার দিকে যাওয়া চাঁদের পরবর্তী অবস্থাগুলো পৃথিবী থেকে আমরা প্রতিদিন দেখতে পারি। মাসের পর মাস ধরে চাঁদ একই রূপ নিয়ে পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে চলেছে। চাঁদের ২৯.৫ দিন(Moon's 29.5 day period) আবর্তন থেকে Month শব্দটি এসেছে।
বেশ কিছু পুরনো সভ্যতায় চাঁদের মাসিক চক্রকে ব্যবহার করে সময় গণনা করা হত। দৈনন্দিন জীবন নির্বাহের জন্য এটা তাদের খুব প্রয়োজনীয় পদ্ধতি ছিল। আসলে অনেক ক্যালেন্ডার চাঁদের বিভিন্ন অবস্থার উপর নির্ভর করেই তৈরি করা হয়েছিল। হিব্রু, মুসলিম এবং চাইনিজ ক্যালেন্ডারগুলো আসলে চান্দ্রমাসকে প্রামান্য বলে বিবেচনা করে। চাঁদের মাসিক চক্রের শুরুর সময়টা বের করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময় থেকেই মাসের গণনা শুরু হয়। সূর্যগ্রহণের সাথেও এই নতুন চাঁদের সূচনাক্ষণটির সুগভীর সম্পর্ক আছে।
চাঁদের দুই ছায়া:
সূর্যের কোন গ্রহণ (অর্থাৎ সূর্যগ্রহণ) শুধুমাত্র নতুন চাঁদের সময়ে ঘটে থাকে। এই সময়ে পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখান দিয়ে চাঁদের আবর্তন ঘটে। এই সময়ে তৈরি হওয়া চাঁদের ছায়া যদি পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশে পড়ে তাহলে সূর্যকে আমরা ঢেকে যেতে দেখব। অর্থাৎ চাঁদের দ্বারা একটি সূর্যগ্রহণ সংঘটিত হবে। যেহেতু নতুন চাঁদ প্রত্যেক সাড়ে ২৯ দিনে দেখা যায়, সেহেতু মনে হতে পারে যে প্রত্যেক মাসেই বুঝি সূর্যগ্রহণ ঘটে; প্রত্যেক মাসেই আমাদের সূর্যগ্রহণ দেখতে পাওয়া উচিত। কিন্তু এমন ঘটে না। কারণ পৃথিবীর চারদিকে চাঁদের আবর্তন পথ সূর্যের চারদিকে পৃথিবীর আবর্তন পথের চাইতে ৫ ডিগ্রি কাত হয়ে আছে। এর ফলে নতুন চাঁদের বিকাশকালে চাঁদের ছায়া প্রায়ই পৃথিবীর বাইরে হয় উপরে বা নিচে পরে যায়। বছরে মাত্র দুইবার পৃথিবী, চাঁদ ও সূর্য এই তিনটি বস্তু ঠিক সমান লাইনে থাকে। এর ফলে চাঁদের ছায়া পৃথিবীর কিছু কিছু অংশে পড়ে এবং আমরা সেইসব জায়গা থেকে সূর্যগ্রহণ প্রত্যক্ষ করি।
চাদের ছায়ার দুইটি অংশ আছে।
(ক) উপছায়া, (খ) ছায়া
(ক) উপছায়া:
- চাঁদের ছায়ার হালকা বহিরাবরণ
- এই ছায়া যে অংশে পড়ে, সেই অংশে পৃথিবী থেকে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যায়।
- চাঁদের ছায়ার অভ্যন্তরভাগের অধিকতর কালো অংশ।
- এই অংশ থেকে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যায়।
যখন চাঁদের উপছায়া পৃথিবীর উপরে পরে, তখন ঐসব জায়গা থেকে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যায়। পূর্ণ সূর্যগ্রহণের চাইতে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা অধিকতর বিপদজনক। কারণ, সূর্যের যে অংশে গ্রহণ লাগে না, সেই অংশটিতে সূর্য খুব উজ্জ্বল থাকে। সূর্যের এই উজ্জ্বলতর অংশ খালি চোখের ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে। তাই বিভিন্ন ধরণের ফিল্টার ব্যবহার করে আংশিক সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা উচিত।
A. Total eclipse in the umbra.
B. Annular eclipse in the antumbra.
C. Partial eclipse in the penumbra
(এই ছবি ও তথ্য নেয়া হয়েছে উইকপিডিয়া থেকে)
B. Annular eclipse in the antumbra.
C. Partial eclipse in the penumbra
(এই ছবি ও তথ্য নেয়া হয়েছে উইকপিডিয়া থেকে)
অসমাপ্ত
0 টি মন্তব্য:
Post a Comment
আপনার প্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ভাবনা, ভিন্নমত প্রকাশ করুন। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলে ইমেইল করুন।