Friday, June 27, 2008

আদিমতম চতুষ্পদী ভেন্তাস্টেগা

আজকের সমকাল পত্রিকায় একটি খবর পাওয়া গেল। প্রাণীবিজ্ঞানের ইতিহাসে আদিমতম প্রাণী নিয়ে আগ্রহ সবসময়ই ছিল। আজকের খবরটা আদিমতম চতুষ্পদী প্রাণীটিকে ঘিরে। এতদিন সংশয় ছিল। কিন্তু এই নতুন খবরে নির্দিষ্টভাবে জানা গেছে আদিমতম চতুষ্পদীর সঠিক পরিচয়। বিস্তারিত পত্রিকা থেকেই তুলে দিলাম।


আদিমতম চতুষ্পদী প্রাণী ভেন্তাস্টেগা (Ventastega curonica) র ছবি নিয়েছি এখান থেকে। ছবি একেছেন 'ফিলিপ রেনে'। ছবির নিচে বাম পাশে দুটো Bothriolepis কে দেখা যাচ্ছে।

সমকাল ডেস্ক
আদিমতম চতুষ্পদীর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। প্রাণীটির করোটি ও অন্যান্য নিয়ামক নিদর্শন উদ্ধার করেছেন একদল গবেষক। তারা মনে করছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে প্রাচীন চার পা-ওয়ালা প্রাণী। এ অনুসন্ধান মাছ থেকে ভূমিতে বিচরণশীল অগ্রসর প্রাণের বিকাশের বিবর্তনী প্রক্রিয়াকে বুঝতে সহায়তা করবে। জীবাশ্মটি ৩৬ কোটি ৫০ লাখ বছরের পুরনো। খবর এপি অনলাইনের।

ভেন্টাস্টেগা কুরোনিকা নামের প্রাণীটির করোটি, স্কন্ধ এবং শ্রোণির অংশবিশেষ সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র লাতভিয়ায় পাওয়া গেছে। এটি জলচর প্রাণী। বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের বৃহস্পতিবারের সংখ্যায় প্রকাশিত এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে গবেষকরা তার কথা জানিয়েছেন।

গবেষকরা বলেন, ভেন্তাস্টেগা সম্ভবত তার ধারায় বিবর্তনের শেষ ধাপ; তারপরও একে খুঁজে পাওয়ায় মাছ থেকে চতুষ্পদীতে বিবর্তনের প্রক্রিয়াকে ভালো করে বোঝা যাবে। জলচর চতুষ্পদীরাই পরে উভচর, পাখি এবং স্তন্যপায়ীতে বিবর্তিত হয়েছে।

ভেন্তাস্টেগার চেয়েও পুরনো একটি প্রাণীর ফসিল এর আগে পাওয়া গেছে। তবে সেটি যত না চতুষ্পদী তার চেয়ে বেশি মাছ। ভেন্তাস্টেগা তার উল্টো, অর্থাৎ এটি যত না মাছ তার চেয়ে বেশি চতুষ্পদী। হিংস্র চেহারার ভেন্টাস্টেগা বাস করত অগভীর ঈষৎ নোনা পানিতে। এর দৈর্ঘ্য তিন থেকে চার ফুট। মাছ খেয়ে প্রাণ ধারণ করত। দূর থেকে দেখলে এটিকে ছোট্ট কুমিরের মতো দেখায়। তবে কাছ থেকে দেখলে এর পিঠে একটা পাখনার অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়।

গবেষণা প্রতিবেদনের প্রধান নিবন্ধক সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনী জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক পের আহলবার্গ বলেন, ‘আমার মনে হয়, এটি কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই বালুময় সৈকতে উঠে আসতে পারত। সাধারণত এটি কম স্রোতের খাড়ি এলাকায় ঘুরাফেরা করত এবং খাড়িতে আটকে পড়া মাছ শিকার করত।’ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, পৃথিবীতে ডাইনোসরের আবির্ভাবের কমপক্ষে দশ কোটি বছর আগে ভেন্টাস্টেগা আবির্ভাব হয়েছিল।

আহলবার্গ জানান, চতুষ্পদীরা সরাসরি ভেন্টাস্টেগার উত্তর-পুরুষ, একথা বিজ্ঞানীরা মনে করেন না। তবে এটি চতুষ্পদী বর্গেরই সদস্য। এটি চতুষ্পদী বর্গের বিক্ষিপ্ত একটি শাখা, যা কোনো উত্তরসূরি না রেখেই কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। সে সময় অনুরূপ বৈশিষ্ট্যের আরো অনেক প্রাণী ছিল। বিবর্তনের ধারায় এরা মধ্য-পর্যায়ী প্রাণী। ভেন্টাস্টেগা বিবর্তনী জীববিজ্ঞানীদের প্রভূত উপকারে আসবে।

পুরো জীবাশ্মটি পাওয়া গেলে আরো ভালো হতো। আহলবার্গের দল ভেন্টাস্টেগার পা এবং বুড়ো আঙুল খুঁজে পায়নি। তবে তারা সার্বিক বিবেচনায় এ সিন্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, এটি চতুষ্পদীই ছিল। বিজ্ঞানীরা এখন একটা বিষয়ে ভাবিত, কেন মাছের দেহে পা গজানোর প্রক্রিয়া শুরু হলো?
--------
সম্পূর্ণ ভেন্টাস্টেগার এই কল্পিত ছবিটি সংগ্রহ করেছি এখান থেকে

0 টি মন্তব্য:

Post a Comment

আপনার প্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ভাবনা, ভিন্নমত প্রকাশ করুন। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলে ইমেইল করুন।