Wednesday, June 18, 2008

পাতাবহুল সাগরড্রাগন

কিছু কিছু প্রাণী আছে যেগুলো তাদের বৈশিষ্ট্য ও গুণগত দিক থেকে বেশ মজার। তাদের চেহারা, কাজকর্ম অন্যান্য প্রাণীদের মত স্বাভাবিক বা সাধারণ নয়। এই ধরণের কিছু মজার ও বিস্ময়কর আকর্ষণীয় প্রাণী নিয়ে আজ থেকে ধারাবাহিকভাবে কয়েকটা পোস্ট দিব। আজকে আলোচনা করছি অস্ট্রেলিয়ার উপকূলে প্রাপ্ত পাতাবহুল সাগরড্রাগন নিয়ে।

পাতাবহুল সাগরড্রাগন
(Leafy Seadragon, Phycodurus eques)


চীন পুরাণ থেকে এদের নামকরণ করা হয়েছে। সাগরের অগভীর এলাকা যেখানে নানারকম শৈবালের জঙ্গল গড়ে ওঠে, সেখানে এদেরকে দেখতে পাওয়া যায়। ৫০ মিটারের বেশি গভীরে পাথর ও সাগরের তলদেশের ঘাসের ফাঁকে এরা বাস করে। গায়ের রং, শরীরে কিছু বর্ধিত অঙ্গ সবকিছুই শ্যাওলার মত। এদের শরীরে সবুজ, কমলা বা সোনালী আভার মত রঙের মিশ্রণ দেখা যায়। আগাছার মত শরীরের পাতার মত অংশগুলো এদেরকে শ্যাওলার ফাঁকে লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করে। তাকিয়ে থাকলেও চোখে পড়ে না। শুধুমাত্র অনুসন্ধানী অভিজ্ঞ চোখ এদেরকে দেখতে পায়। কাঁপতে থাকা হালকা রঙের পাখনা ও এদিক ওদিক তাকানো চোখ দেখে এদেরকে চিহ্নিত করা যায়। এরা লম্বায় প্রায় ১৮ ইঞ্চি বা ৪৫ সে.মি. এর মত হয়।

সাগরঘোড়ার মত এই প্রাণীদের পুরুষরা বাচ্চা প্রস্ফুটনে সহায়তা করে। নারী প্রজাতিরা একবারে ১৫০ থেকে ২৫০টার মত উজ্জ্বল গোলাপী রঙের ডিম পাড়ে। নারী প্রজাতির প্রাণীরা এই ডিমগুলোকে লম্বা টিউব দিয়ে পুরুষ প্রজাতির লেজের নীচে মৌচাকের মত জায়গায় জমা করে। এই জায়গাটির নাম "তা দেয়ার জায়গা" (Brood Patch)। ডিমগুলো এখানে ৮ সপ্তাহের মত থাকে। বাচ্চা প্রস্ফুটনে সাহায্য করার জন্য পুরুষরা তাদের লেজ বারবার নড়াচড়া করে।

এদের কোন দাঁত কিংবা পাকস্থলী নেই। লম্বা ফানেলের মত টিউব দিয়ে এরা প্লাঙ্কটন, ছোট মাছ বা চিংড়ি খেয়ে থাকে। সাধারণত শান্ত, হালকা ঠাণ্ডা জলে এরা বাস করে। অস্ট্রেলিয়ার উপকূল এদের প্রধান বাসস্থান। দূষণের কারণে এদের জীবন বিপন্ন হবার কারণে অস্ট্রেলিয়া সরকার ১৯৮২ সাল থেকে এদেরকে সংরক্ষিত প্রাণী হিসেবে রক্ষা করে আসছে।

0 টি মন্তব্য:

Post a Comment

আপনার প্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ভাবনা, ভিন্নমত প্রকাশ করুন। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলে ইমেইল করুন।