Monday, January 12, 2009

২০০৮ সালের সেরা ১০টি বৈজ্ঞানিক ঘটনা -০২

নতুন জগৎ:
বিজ্ঞানীরা সবসময় এমন ধারণা করতেন যে সূর্য ছাড়াও এমন নক্ষত্র আছে যার চারপাশে পৃথিবীর মতো গ্রহ নিয়মিত আবর্তিত হয়। কিন্তু ১৯৯৫ সালের আগে এরকম বহির্জাগতিক গ্রহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। সেই বৎসরে এরকম কিছু সৌরজগতের দেখা মেলে। ২০০৮ সালের জুন মাসে মাইকেল মেয়র (Michel Mayor) ৪৫টি সৌরজগত খুঁজে পান, এর কয়েকটি পৃথিবীর চাইতে মাত্র ৪.২গুণ বড়। কিন্তু সেগুলোতে প্রাণ বিকাশের উপযোগী কোন পরিবেশ রয়েছে কিনা তা খুঁজে দেখার মতো শক্তিশালী যন্ত্র মেয়রের ছিলনা। ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মহাকাশবিজ্ঞানীদের দুটো দল চারটি বহির্জাগতিক পৃথিবীর দেখা পান। এই প্রথম এ জাতীয় ভিনগ্রহের স্পষ্ট ও আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি দিয়ে তোলা ছবি পাওয়া গেল।

অদৃশ্য হয়ে যাওয়া:
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী বার্কলে (Berkeley) এবং কালিফ (Calif) ঘোষণা করেন যে, তারা এমন পোষাক আবিষ্কার করতে পেরেছেন যা পরিধান করে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া সম্ভব । বিষয়টা আসলে পদার্থ ও আলোকবিজ্ঞানের এক জটিল সংমিশ্রণ। বিজ্ঞানীরা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তারের একটি জালিকা এলুমিনিয়ামের টিউবের ভিতরে স্থাপন করে একটি পাতলা কাপড়ের মতো বস্তু উদ্ভাবন করেছেন। এটা কাগজের চাইতে ১০ গুণ বেশি পাতলা। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করতে পেরেছেন যে তারা এই পদার্থ দিয়ে এমন একটি বহিরাবরণ তৈরি করতে পারবেন, যার মধ্যদিয়ে আলোর স্রোত প্রবাহিত করলে তা কার্যকরীভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। এই বিষয়টা এখনও পরীক্ষাধীন। খরচও অনেক বেশি। কিন্তু এই দৃশ্যমান জগতে আমরা অদৃশ্য হয়ে যেতে পারি, এই আবিষ্কারের ফলে একথা বলা আর কঠিন নয়।

সিনোজয়িক পার্ক (Cenozoic Park):
একগুচ্ছ চুল সাধারণত কোন খবরের হেডলাইন হয়না। কিন্তু ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে এমনই একটা ঘটনা ঘটে গেল। জীবরসায়নের অধ্যাপক স্টিভেন স্কাসটার (Stevan Schuster) ঘোষণা করলেন যে তিনি লোমশ ম্যামথের চুল থেকে তার জিনোমের ৮০ ভাগ পুনর্গঠন করতে পেরেছেন। এটা শুধুমাত্র তিন বিলিয়ন ডিএনএ'র ধারাবাহিকতাকে একত্রিত করা নয়, এই ঘটনাটি ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবের অন্তর্গত উপাদানকে বুঝতে সহায়তা করবে। তবে এখনি জুরাসিক পার্কের মতো লোমশ ম্যামথের কোন দল তৈরি করা সম্ভব হবে না। কিন্তু এই আবিষ্কার যে সেই সম্ভাবনাকে উস্কে দেয়নি, তা বলা কঠিন।

বিজ্ঞান পড়ুয়ার পরিসংখ্যান:
আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষিত মানুষের পরিমাণ ১৯৭৯ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে দ্বিগুণ অর্থাৎ ১৭% হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক তথ্য জানতে সম্প্রতি মিসিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের জনৈক অধ্যাপক এক জরীপ চালান। এতে দেখা যায় বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা কিঞ্চিত বেড়েছে। মাত্র ২৫%। যে জাতি উড়োজাহাজ, বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করেছে, যারা চাঁদে পা রেখেছে তাদের মধ্যে বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষিত মানুষের এই পরিমাণ মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়।

প্রথম পরিবার:
মধ্য জার্মানিতে বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো পরিবারের ফসিল পাওয়া গেছে। ৪৬০০ বৎসরের পুরনো এই পরিবারটি কোন আক্রমণের শিকার হয়ে মারা গেছে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন। পাথর যুগের এই পরিবারটির প্রত্যেক সদস্যের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ করে মেরুদণ্ড ক্ষতবিক্ষত ছিল। পরিবারের দুইটি পুরুষ শিশুর একটি ৮-৯ বৎসর বয়স ও অন্যটি ৪-৫ বৎসর বয়সের ছিল। হয়তো এই পরিবারটিই সবচাইতে পুরনো পরিবার নয়। কিন্তু এ পর্যন্ত প্রাপ্ত ফসিলের মধ্যে এটিই যে পুরনো পরিবারের এতে কোন সন্দেহ নাই।

সূত্র: টাইম

0 টি মন্তব্য:

Post a Comment

আপনার প্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ভাবনা, ভিন্নমত প্রকাশ করুন। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলে ইমেইল করুন।