রোগ তাড়াতে হাত ধোয়া কেন সর্বোত্তম ওষুধ হতে পারে
আমরা প্রত্যেকেই জানি যে, হাত ধোয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিক কালে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বারে বারে এবং সঠিক সময়ে ও নিয়মে হাত ধুলে আপনার পরিবার অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থেকে বহুলাংশে রেহাই পাবে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, হাত ধোয়া বিষয়ক গবেষণায় চিকিৎসা এবং খাদ্য সেবা বিভাগের ব্যক্তিদেরকেই গুরুত্ব দেয়া হয়। তবে গত ডিসেম্বর, ২০০৭ মাসে 'আমেরিকান জার্নাল অব ইনফেকশন কন্ট্রোল' নামক সাময়িকীতে বলা হয়েছে যে, ঘরো পর্যায়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে সংক্রামক রোগব্যাধির বিস্তার রোধ করা সম্ভব। কতিপয় গবেষণায় দেখা গেছে, হাত হচ্ছে সকল ধরনের সংক্রমণ বিস্তারের একক বড় মাধ্যম।
টয়লেট ব্যবহারের পর কিংবা বাচ্চাদের ন্যাপি বদলানোর পর হাত ধুতে জানে প্রায় সকলেই। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, বাথরুম ব্যবহারের পর বাচ্চাদের যত্নআত্তি করার সময় অনেকের হাতেই ময়লা লেগে থাকে।
অতি সম্প্রতি পোলিও'র ভ্যাকসিন নেয়া শিশুদের নিয়েও গবেষণা হয়েছে। দেখা গেছে, ভ্যাকসিন নেয়ার পর ভাইরাস শিশুর মলে স্থান নেয়। গবেষকরা শতকরা ১৩ ভাগ বাথরুম, শোবার ঘর, রান্নাঘরের উপরিভাগে ভাইরাসের সন্ধান পেয়েছেন। মলবাহিত ভাইরাস বিভিন্ন স্থঅনে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যে সকল বাড়িতে খাদ্যবাহিত ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, সে বাড়ির টয়লেটেও ব্যাকটেরিয়ার আনাগোনা দেখা গেছে। টয়লেটে ব্যবহৃত পানিও দূষণের একটি উৎস।
দরজার হাতল, বাথরুমের ট্যাপ এবং টয়লেটের হাতল বাড়িতে জীবাণু দূষণের প্রধান উৎস। এসব সর্বদাই পরিষ্কার রাখতে হবে এবং এগুলো স্পর্শ করার পর হাত ধুতে হবে। এক জরিপে দেখা যায়, একজন স্বেচ্ছাসেবী ভাইরাস দূষিত দরজার হাতল স্পর্শ করার পর অন্যান্য কয়েকজনের সঙ্গে করমর্দন করেন। দেখা যায়, এর ফলে ছয়জনের দেহে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।
গবেষকরা যে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন তা এই যে, হাত ধোয়ার সময়টা অত্যন্ত জরুরি ব্যাপার। টয়লেট ব্যবহারের পর, হাঁচি দেয়ার পর এবং খাদ্য নড়াচড়ার পর হাত ধোয়া দরকার। ডায়াপার ব্যবহার, পোষা প্রাণী পরিষ্কার করার পর, আবর্জনার পাত্র ধরার পর, কাপড় ধোয়া, থালাবাসন মাজার ন্যাকড়া নাড়াচাড়ার পর হাত ধুতে হবে।
হাত ধোয়ার মত সাদামাটা বিষয়টা পারিবারিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলবে - এটা বিশ্বাস করা কঠিন মনে হতে পারে। এক্ষেত্রে ২০০৩ সালে হংকং এ সার্স (SARS) ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কথা স্মরণ করা যেতে পারে। এটা ছিল মারাত্মক ধাঁচের ভাইরাস ঘটিত নিউমোনিয়া। এ ঘটনার পর মৌলিক স্বাস্থ্য সচেতনতা সহ নিয়মিত হাত ধোয়ার বিষয়টা গুরুত্ব লাভ করে। এর ফলে সার্স - প্রচণ্ডতা থেমে যায় শুধু তা-ই নয়, ফ্লু সহ অন্যান্য ফুসফুসের সমস্যাও কমে যায়।
Sunday, July 20, 2008
সর্বোত্তম ওষুধ হাত ধোয়া
এবারের "গণস্বাস্থ্য" (২৭ বর্ষ, ২য় সংখ্যা, আষাঢ় ১৪১৫) পত্রিকায় একটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চোখে পড়ল। "রোগ তাড়াতে হাত ধোয়া কেন সর্বোত্তম ওষুধ হতে পারে" শিরোনামের লেখাটি আমার কাছে প্রাত্যাহিক সচেতনতার অন্যতম অংশ বলে মনে হল। পারিবারিক এই সাধারন সচেতনতাটি সকলেই জানেন; আবারো স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য শেয়ার করছি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 টি মন্তব্য:
Post a Comment
আপনার প্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ভাবনা, ভিন্নমত প্রকাশ করুন। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলে ইমেইল করুন।