Thursday, March 13, 2008

মঙ্গলে জল না অন্যকিছু?


ভিনগ্রহে প্রাণের খোঁজ পাওয়ার জন্য বিজ্ঞানীদের চেষ্টার শেষ নেই। যতরকমভাবে অন্য গ্রহে প্রাণের একটুমাত্র চিহ্ন খুঁজে পাওয়া সম্ভব তার সবই বিজ্ঞানীরা করে চলেছেন। সৌরজগতে পৃথিবীর নিকটতম প্রতিবেশী লাল গ্রহ মঙ্গল। পৃথিবীর মতই তার আকার। তাই প্রত্যাশাও অনেক বেশি।

জীবনের জন্য জল অবশ্যম্ভাবী একটি বস্তু। এই জলে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণু পর্যন্ত বাঁচতে পারে। একথা পৃথিবীর মতো মঙ্গলের ক্ষেত্রেও সত্য। মঙ্গলে যদি কোনভাবে জলের একটুমাত্র চিহ্ন খুজে পাওয়া যায় তাহলে সেখানে প্রাণের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাবে।

বিজ্ঞানীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় বিষয় হল মঙ্গলগ্রহে জলের উপস্থিতি। সৌরজগতের মধ্যে পৃথিবীর নিকটতম প্রতিবেশী মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে বিজ্ঞানদের আগ্রহ অনেকদিনে। এই লাল গ্রহটিকে মানুষ অনেক আগে থেকেই চিনত। এই মঙ্গলগ্রহে একটি প্রাণ খুঁজে পাবার জন্য বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টার অন্ত নেই।

১৯৯৯ থেকেই এ ব্যাপারে জোর আলোচনা চলছে। বিজ্ঞানীরা মঙ্গলগ্রহে প্রচুর পরিমাণ বরফে পরিণত হওয়া জলের সন্ধান দিয়েছেন। মঙ্গলগ্রহের দক্ষিণের পাথুরে অঞ্চলে একটি পাথরের শরীরের ঘষা দাগকে দূর অতীতে জলপ্রবাহের চিহ্ন বলে মনে করেন। এই আবিষ্কারটি নিয়ে ২০০৬ সালে হঠাৎ করে চারদিকে হৈচৈ পড়ে গিয়েছিল। বিভিন্ন আলোচনায় বিজ্ঞানীরা একে জলপ্রবাহের ফলে সৃষ্ট দাগ বলে মন্তব্য করেছেন।

নাসা কিছু ছবি প্রকাশ করেছিল যেগুলোতে জলপ্রবাহের চিহ্ন খুবই স্পষ্ট বলে বিজ্ঞানীরা মতামত দিয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই বিস্ময়কর ঘটনাটি সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিদ্যার অধ্যাপক জন প্লেটিয়ার।

গতবছর সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখে নাসা মঙ্গলের দক্ষিণের উচ্চভূমি কিছু ছবি প্রকাশ করেছিল। ছবিগুলো হাই রেজুলুশন ইমেজ সাইন্স এক্সপেরিমেন্ট (HiRISE) ক্যামেরায় তোলা। সম্প্রতি তোলা এই ছবিগুলো এবং পূবের্র ছবিগুলো ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করা হয়েছে। এই ছবিগুলোতে পাথরের গায়ে সৃষ্টি হওয়া প্রবাহের ছাপ বেশ স্পষ্ট।

বিজ্ঞানী জন প্লেটিয়ার একটি টেলিফোন সাক্ষাৎকারে বলেন _ আমরা কোন তত্ত্বকে ভুল প্রমাণিত করার জন্য শুরু করিনি। প্রথমদিকে আমিও ভেবেছিরাম এই দাগগুলো হয়ত সত্যিই কোন তরলের।

বিজ্ঞানীরা তৈরি করা সিমুলেশনটি বহুবার পর্যবেক্ষণ করেছেন। কিন্তু কোনবারই তা তরল জলের প্রবাহের সাথে মেলেনি। কিন্তু শুকনো বা গুড়ো কোন কিছু যেমন বালি বা পাথরের টুকরো ইত্যাদির সাথে মিলে যায়।

তাহলে ঐ ঘষাটে দাগ কিসের? এ বিষয়ে আরিজোনার মহাকাশ বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যায়ের অধ্যাপক ম্যাকেইন বলেন_ আমরা শুকনা প্রবাহের তত্ত্বটি বাদ দেয়ার আশা করতে পারি কিন্তু তা সম্ভব নয়।

প্লেটিয়ার অবশ্য বলেন ১৬০০ ফিট লম্বা ও ৩৩০ ফিট উঁচু একটা ঘষে ছড়ে যাওয়ার দাগ বিষয়ে তরল প্রবাহের তত্ত্বকে আমার গবেষণা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করবেনা। এই দাগ হওয়ার আরেকটি সম্ভাব্য কারন হতে পারে কোনরকম ঘন কাদার প্রবাহ। এর মধ্যে ৫০-৬০ ভাগ অবশ্যই কোন দানাদার কিছুর মিশ্রণ ছিল, যেমন লাভা বা গুড়। প্লেটিয়ার (Pelletier) এর ভাষায় "The simplest explanationis that it is dry, granular flow," Pelletier said, "We think that the simpler explanation is probably the correct one."

2 টি মন্তব্য:

Anonymous said...

মঙ্গল নিয়ে কি-না করেছে মানুষ। রচনা করেছে গল্প, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী, পুরাণ। তবে সবকিছুকে ছাড়িয়ে অপ্রি সত্য প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানের কারণে। মঙ্গরে অন্য কিছু নেই। কেবলই একটি নিরস অনুর্বর গ্রহ।

তবে হতাশার কোন কারণ নেই। বহির্গ্রহ (সৌর জগতের বাইরের গ্রহ) সন্ধান তো সবে শুরু হলো। একদিন না একদিন বহির্জাগতিক প্রাণের সন্ধান আমরা পাবোই।

Susanta said...

মঙ্গলে প্রাণের কোন চিহ্ন খুঁজে না পাওয়ার কারণে এটা অন্তত প্রমাণিত যে এই সৌরজগতে একমাত্র আমাদের পৃথিবীতেই প্রাণের বিকাশ হয়েছে।

Post a Comment

আপনার প্রাসঙ্গিক মন্তব্য, ভাবনা, ভিন্নমত প্রকাশ করুন। প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে না চাইলে ইমেইল করুন।